বর্তমানে চাকরি চাহিদা (Trending Jobs Preparation) দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং প্রতিযোগিতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি যে চাকরি পেতে চান সেই চাকরির ওপর নির্ভর করেই তার প্রস্তুতির পথ আলাদা হতে পারে। তবে এমন কিছু কিছু ক্ষেত্র আছে যে চাকরির উচ্চ চাহিদা এবং ভালো ক্যারিয়ারের সুযোগ রয়েছে। নিম্নে সেরকম কিছু চাকরি প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করা হলো:
পড়া মনে রাখার বিশেষ কৌশল জেনে নিন
১. ব্যাংকিং ( বিশেষ করে psc ব্যাংক পরীক্ষার জন্য) :
ব্যাংকিং সেক্টর ( বিশেষত পাবলিক ব্যাংকগুলো) একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় চাকরির ক্ষেত্র।
- ব্যাংক এবং অন্যান্য চাকরির প্রতিষ্ঠানগুলো চাকরি :
সাধারণত সুনির্দিষ্ট পরিবেশের প্রক্রিয়া রয়েছে ব্যাংক পরীক্ষা এই ব্যাঙ্ক পরীক্ষা দিতে গেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাধারণ জ্ঞান ,ইংরেজি ,গণিত, ব্যর্থ সংক্রান্ত বিষয় এবং মানসিক দক্ষতার উপর ভিত্তি করে প্রশ্নপত্র থাকে।
- প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ : ব্যাংকিং নিয়মাবলী : ব্যাংকিং সেক্টরে চাকরির জন্য কিছু নিয়মাবলী থাকে যা হল কিছু মৌলিক বিষয় যেমন ব্যাংকিং পদ্ধতি ,অর্থনীতি ইত্যাদি। মক টেস্ট : ব্যাংকিং সেক্টরে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার মক টেস্ট এর মাধ্যমে হয়ে থাকে । গণিত এবং ইংরেজি : এই সেক্টরে চাকরির জন্য গণিত এবং ইংরেজি নিয়মিত চর্চা জরুরী।
২. আইটি /সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট :
আইটি এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ( বিশেষত ওয়েব ডেভলপমেন্ট, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ,ডেটা সায়েন্স) বর্তমান সময়ে সবচেয়ে লাভজনক ক্যারিয়ার তৈরীর ক্ষেত্রে এগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। এই সমস্ত বিষয় দক্ষতা অর্জন করলে চাকরি সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।
প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ :
প্রোগ্রামিং শেখা : C, Java, python, JavaScript, HTML, CSS, react, node.js, Django ইত্যাদি প্রোগ্রামিং শিখে রাখা প্রয়োজন।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম : Codeacademy , Freecodecamp , Udemy ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম এর কোর্স করতে হবে ।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন : ছোট প্রজেক্টরের মাধ্যমে নিজের কাজ প্রদর্শন করতে হবে যা নিয়োগকারীদের আকর্ষিত করতে সাহায্য করবে।
৩. ফিন্যান্স ও অ্যাকাউন্টিং : ফিন্যান্স এবং একাউন্টিং সেক্টরে চাকরির জন্য প্রচুর সুযোগ সুবিধা রয়েছে। বিশেষত সিএ ,সিএএফএ এবং ফিনান্সিয়াল অ্যানালিস্ট প্রফেশনাল গুলির জন্য ।
প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ :
ফিন্যান্স এর মৌলিক বিষয় শিখুন : বাজেটিং, হিসাব রক্ষণ, ট্যাক্সেশন, আর্থিক রিপোর্টিং ইত্যাদি মৌলিক বিষয়গুলি শিখে রাখতে হবে ।
এফ এম এস কোর্স : ACCA , CFA , CIMA এর মত সার্টিফিকেট কোর্সুলির দিকে নজর দিতে হবে ।
৪. হেলথ কেয়ার ( মেডিক্যাল/ নার্সিং) :
বিশ্বব্যাপী শাসক খাতে এই হেলথ কেয়ারে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে বিশেষত নার্সিং, প্যারামেডিকেল কোর এবং মেডিকেল রিসার্চ এর ক্ষেত্রে ।
প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ :
মেডিকেল কোর্স : MBBS, BDS , নার্সিং বা প্যারামেডিকেল কোর্স ভর্তি হতে পারেন।
নতুন ট্রেন্ড : টেলিমেডিসিন ,ডিজিটাল হেলথ কেয়ার সম্পর্কে নানান রকম ধারণা অর্জন করতে হবে।
৫. প্রতিযোগিতামূলক সরকারি চাকরি ( BCS , ব্যাংক, শিক্ষা ) :
ভারতের সরকারি চাকরির প্রতি জনগণের আগ্রহ এবং প্রতিযোগিতা অত্যন্ত বেশি। সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে ভারতের সিভিল সার্ভিস ( BCS) নামক পরীক্ষাটির জন্য। এছাড়াও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাংক, শিক্ষা ,স্বাস্থ্য ,প্রশাসনিক পদেও নানান রকম চাকরি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ :
নিয়মিত পড়াশোনা : BCS অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান, বাংলা ,ইংরেজি ,গণিত ,সাধারণ বিজ্ঞান ,বাংলাদেশ নিয়মাবলী আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী গুলো প্রশ্নপত্রের দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ কোচিং : দীর্ঘ সময় ধরে কোচিংয়ে ভর্তি হয়ে ধীরে ধীরে শিক্ষার মাধ্যমে জনগণেরা জ্ঞান অর্জন করতে পারে।
মক টেস্ট : পূর্ববর্তী প্রশ্নপত্র এবং মক টেস্ট দিয়ে প্রস্তুতি নিন।
৬. ডিজিটাল মার্কেটিং :
আজকাল ইন্টারনেটের মাধ্যমে নানান রকম ব্যবসা এবং কাজের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিজিটাল মারকেটিং যেমন এসইও, এস ই এম, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং ইত্যাদি চাহিদা খুব বেশি । বিভিন্ন কোম্পানি তাদের অনলাইন উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিশেষ জ্ঞানের সন্ধান করেছে।
প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ :
প্রাকটিক্যাল কাজ : ছোট ব্যবসার জন্য প্রজেক্ট এবং ফ্রীলান্সের কাজ করতে পারেন। এটি বাস্তবের নানান অভিজ্ঞতা লাভের জন্য খুবই সহায়ক একটি কাজ।
অনলাইন কোর্স : Udemy , Coursera , linked in learning এর মত প্লাটফর্ম থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করতে পারবে।
৭. ডেটা সায়েন্স ও অ্যানালিটিক্স :
ডেটা সাইন্স এবং অনালিটিক্স এর চাহিদা খুবই বেশী । বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নিতে ডাটা সাইন্টিস্ট বা ডাটা আনা লিস্ট এর সাহায্য নিচ্ছে।
প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ :
অনলাইন কোর্স : data science , machine learning নিয়ে বিভিন্ন কোর্স প্লাটফর্মে ( Coursera, edx ) রয়েছে।
প্রাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা : Kaggle এর মত সাইটে চ্যালেঞ্জ এবং প্রজেক্টে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
মেসিন লার্নিং এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স শিখুন : python , SQL, R , Tableau, Power BI ইত্যাদি টুলস এর ব্যবহার শিখতে হবে ।
৮. গ্রাফিক ডিজাইন এবং ভিডিও এডিটিং :
গ্রাফিক ডিজাইন, ইউ এক্স/ ইউ আই ডিজাইন ভিডিও এডিটিং এবং ম্যানিপুলেশন ইত্যাদি সৃজনশীল কাজের জন্য বাজারে চাকরির চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ :
সফটওয়্যার দক্ষতা : Photoshop, illustrator, after effect, final cut Pro, Adobe premier Pro ইত্যাদি নানান রকম সফটওয়্যার শিখে রাখতে হবে ।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন :
আপনার ডিজাইন কাজ এবং ভিডিও তৈরি করে পোর্টফলিও করুন।
৯. ফ্রিল্যান্সিং :
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য চাকরির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি Up work, fiverr, Freelancer প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে পারেন ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য নাদান ধরনের দক্ষতা প্রয়োজন হতে পারে। যেমন কন্টেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ,ট্রান্সলেশন ইত্যাদি।
প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ :
কোন একাধিক স্কিল :
শিখুন এবং সেই স্কিলটে কাজে লাগিয়ে ফ্রান্সের কাজ শুরু করতে পারেন।
অনলাইন রিসোর্স: ফ্রিল্যান্স সম্পর্কিত কোর্স এবং টিউটোরিয়াল দেখে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারেন।
উপরে লিখিত এই নিম্ন পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট স্কিনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে নিয়মিত অনুশীলন এবং সঠিক পরিকল্পনা মাধ্যমে আপনারা আপনাদের ক্যারিয়ারে সফল হতে পারেন।