কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য শিক্ষকের মেডিকেল গ্রাউন্ড ট্রান্সফার (Medical Ground Teacher Transfer) নিয়ে মানবিক রায় দিলেন। সন্তান অসুস্থ , তার জন্য শিক্ষক বাবা ট্রান্সফার পেলেন কোর্টের অর্ডারে।
পড়া মনে রাখার নতুন কৌশল যা ছাত্র ছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করবে
কলকাতা হাইকোর্টের কোর্ট কেস নম্বর WPA 20742 of 2023 মামলায় সৌরভ বসু বনাম পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দপ্তর ও অন্যান্য দের করা একটি মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায় দিলেন মাননীয় বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য।
সৌরভ বসু নামে একজন শিক্ষক যিনি ফতেয়ুপুর জুনিয়র হাই স্কুলের শিক্ষক। তিনি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলাতে চাকরি করতেন। তার চার বছরের কন্যা সন্তান এর শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করেছিলেন ২৭ জানুয়ারি ২০২২। কারণ হিসাবে তিনি জানান তার চার বছরের কন্যা সন্তান সেরিব্রাল পালসি রোগে আক্রান্ত এবং সেই জন্যই তিনি ট্রান্সফার চান। সেরিবল পালসি রোগে আক্রান্ত শিশুর জন্য তিনি বাড়ির কাছে ট্রান্সফার চান। কিন্তু ঐ শিক্ষকের আবেদন গ্রাহ্য করা হয়নি কারণ শিক্ষক- কর্মীদের মেডিকেল গ্রাউন্ড ট্রান্সফার রুলসে যে সমস্ত রোগ গুলির কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে ওই রোগটি নেই। তাছাড়া তিনি সিঙ্গেল সাবজেক্ট টিচার ছিলেন।
২০২১ সালে জেনারেল ট্রান্সফার অন স্পেশাল গ্রাউন্ড রুলস 4 (a) তে যে সমস্ত রোগের কথা বলা হয়েছিল সেগুলি হল;
যদি কোন শিক্ষক-শিক্ষিকার পুত্র অথবা কন্যা অথবা স্ত্রী Malignant Diseases এ ভোগেন। হার্টের সমস্যায় ভোগেন, কিডনির সমস্যায় ভোগেন, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হন, কোন অঙ্গ প্রতিস্থাপন হলে অথবা সিরিয়াস গাইনোকলজি রোগ থাকলে তিনি মেডিকেল গ্রাউন্ডে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনকারীর মামলাটি ভালো করে শুনে মাননীয় বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর অফ স্কুল নদীয়াকে নির্দেশ দেন যে ওই শিক্ষকের ট্রান্সফারের আবেদনটি মানবিক দিক দিয়ে দেখা হোক।
কারণ ওই শিক্ষকের চার বছরের কন্যা সন্তান সেরিবাল পালসিতে ভুগছেন।
ট্রান্সফার রুলে এটিও বলা হয়েছে যে যদি কোন শিক্ষক বা শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীর কন্যা, পুত্র বা স্ত্রী যদি কোন শারীরিক সমস্যায় ভোগেন এবং যার জন্য ওই শিক্ষকের নিয়মিত স্কুলে আসার সমস্যা তৈরি হয় তাহলে তাকে ট্রান্সফারের কনসিডার করা উচিত।
মাননীয় বিচারপতি ও নির্দেশ দেন যে ওই শিক্ষকের কন্যার মেডিকেল রিপোর্ট ভালো করে পরীক্ষা করে মানবিক দিক দিয়ে বিচার করে শিক্ষকের ট্রান্সফার আবেদন মঞ্জুর করা হোক। মেডিকেল রিপোর্টটি CMOH এর কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মেডিকেল রিপোর্টটি পাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গ সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন ওই শিক্ষকের ট্রান্সফারের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ওই শিক্ষকের ট্রান্সফারের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখার কথা বলা হয়েছে। এই মামলায় আইনজীবী হিসেবে ছিলেন শুভ্রপ্রকাশ লাহিড়ী এবং বিচারপতি ছিলেন মাননীয় সৌগত ভট্টাচার্য।